অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে সম্প্রতি মিশর সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সেখানে চলমান সংকটের বিষয়ে মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এরপরও গত রোববার সিসি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ‘আত্মরক্ষার অধিকারের সীমা পেরিয়ে গেছে’। ইসরায়েল গাজাবাসীর লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে ‘সমষ্টিগত শাস্তি’ দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ অবস্থায় সংঘাত বন্ধ ও গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোয় মিশর অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
কী করছে মিশর
গাজার অবরুদ্ধ জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছাতে এল আরিশের বিমানবন্দর খুলে দিয়েছে মিশর। জর্ডান, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো থেকে ত্রাণ সাহায্য জড়ো হচ্ছে সেখানে।
এর সঙ্গে মিশরীয়দের দেওয়া অনুদান মিলিয়ে এরই মধ্যে ১০০টিরও বেশি ট্রাকে ত্রাণসামগ্রী লোড করা হয়েছে। ট্রাকগুলো বর্তমানে উত্তরাঞ্চলীয় সিনাই উপদ্বীপে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, অনুমতি পেলেই রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় ঢুকতে প্রস্তুত সেগুলো।
গাজাবাসীর জন্য মিশরীয় সরকারের উদ্যোগে একটি রক্তদান কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। দেশটির সব অঞ্চলে খোলা হয়েছে রক্তদান কেন্দ্র।
কৌশলী পদক্ষেপ
গাজায় সাহায্য পাঠানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা-সমঝোতা হয়েছে মিশরের। এক্ষেত্রে অবরুদ্ধ উপত্যকায় আটকেপড়া দ্বৈত নাগরিকদের মিশরীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে বের হতে দেওয়ার বিনিময়ে গাজায় মানবিক সাহায্য ঢুকতে দেওয়ার শর্ত দিয়েছে তারা।
তবে সোমবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সীমান্ত খোলা হয়নি। মিশর জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে নিরাপদ পথের (সেফ প্যাসেজ) প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
এর জবাবে মিশরও গাজা থেকে দ্বৈত নাগরিকদের সীমান্ত পেরোনোর অনুমতি দেয়নি। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেই কেবল এসব নাগরিককে মিশরের ভূখণ্ডে ঢুকতে দেওয়া হবে।
রাফাহ শহরে ঠিক কতজন দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পন্ন ফিলিস্তিনি আটকা পড়েছেন, তা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ধারণা, মার্কিন পাসপোর্টধারী ৫০০ থেকে ৬০০ জন নাগরিক ফিলিস্তিনি উপত্যকাটিতে আটকা পড়েছেন।
গাজায় বেশ কয়েকজন ফরাসি নাগরিকও রয়েছেন। তাদের মিশরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য সোমবার কায়রো যাচ্ছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।
Leave a Reply