ডেস্কঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ করতে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে ইসরাইলকে ‘যা কিছু’ করার কথা বলেছেন ইসরাইলের কট্টর সমর্থক মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।
সোমবার আনাদোলু নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১২ মে) মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ‘জার্মানি ও জাপানের সাথে লড়াই করে পার্ল হারবারে পর জাতি হিসেবে আমরা যখন ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছিলাম, তখন আমরা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা ফেলে যুদ্ধ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেটি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। তাই ইসরায়েল যেন যুদ্ধ শেষ করতে পারে সেজন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় বোমা (পারমানবিক) দেয়া উচিত। তারা হারতে পারে না।
ইসরাইলের কট্টর সমর্থক লিন্ডসে গ্রাহাম গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফায় ইসরাইলি সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে অস্ত্র সরবরাহ রুখে দেয়ার বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন। এ সময় এনবিসির উপস্থাপক ক্রিস্টেন ওয়াকার গ্রাহামের কাছে জানতে চান, ১৯৮০–এর দশকে লেবাননে যুদ্ধের সময় ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ থেকে বিরত ছিল রোনাল্ড রিগ্যানের প্রশাসন। সে বিষয়টি ঠিক বলে মানলেও বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত কেন ঠিক মনে করছেন না?
এ সময় সিনেটর গ্রাহাম আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তুলে ধরেন। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কেন আমেরিকার পক্ষে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলা ঠিক ছিল? কেন এটা করা আমাদের জন্য ঠিক ছিল? কারণ, আমরা ভেবেছিলাম এটা ঠিক আছে।
এ সময় লিন্ডসে গ্রাহাম ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সুতরাং ইসরাইল, ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকার জন্য যা কিছু করতে হয়, তা তোমরা করো। তোমাকে করতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে লিন্ডসে গ্রাহাম গাজায় বেসামরিক প্রাণহানির জন্য হামাসকেই দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, হামাস বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস তাদের নিজ জনগণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে ততক্ষণ গাজায় বেসামরিক মৃত্যু কমানো অসম্ভব।’
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এ সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরাইলিকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে। এখনো হামাসের কাছে ১২৮ জন বন্দী হিসেবে আটক রয়েছে।
এদিকে ৭ অক্টোবর ইসরাইল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে যা এখনো চলছে। গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত এ হামলায় ৩৫ হাজার ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
সূত্র : আরব নিউজ ও আল–জাজিরা
আরো পড়ুনঃঢাকায় আসলেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু
আরো পড়ুনঃ৩৪৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ ০১ চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০
Leave a Reply