প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বৈশ্বিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের দেশ হবে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দেশ। সেভাবেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন যেন কখনোই বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য শিক্ষার্থীদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি (মরণোত্তর) প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আজকের প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মধ্যে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ২০০৯ সাল থেকে গত ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ। জাতির পিতার প্রতিটি কথা ও বাণী হৃদয়ে ধারণ করে আমরা তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমি যতদিন আছি, ততদিন দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। এরপর যেন দেশের এ অগ্রযাত্রা থেমে না যায় সেই লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন,করোনা মহামারি ও যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমরা বাংলাদেশে দারিদ্র বিমোচন করতে পেরেছি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি করতে পেরেছি। গৃহহীন-ভূমিহীনদের ঘর দিয়েছি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ও বীর নিবাসের ব্যবস্থা করেছি। অসহায়দের জন্য ভাতা ও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা করেছি। এভাবেই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, গবেষণার ওপর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আরো গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। আমি চাই গবেষণা যেন আরো হয়। কৃষি গবেষণায় আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, দ্বিতীয়টাও করবো। এরপর আমাদের চাঁদে যেতে হবে। সেজন্য এরই মধ্যে লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ও করে দিয়েছি।
বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব ল’ প্রদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র থাকার সময় ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারিদের দাবি আদায় করতে গিয়ে বহিষ্কার হওয়া বঙ্গবন্ধু মুচলেখা দিয়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখেননি। কারণ তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। জাতির পিতার সেই বহিষ্কারাদেশ ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট প্রত্যাহার করে নেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন চ্যান্সেলর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ভর্তি হতে পারলে, মাস্টার্স শেষ করতে পারলে খুব খুশি হতাম। কারণ ’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের পর জীবনের গতিপথ পরিবর্তনে আমার আর মাস্টার্স সম্পন্ন করা হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক ডিগ্রি পেয়েছি, নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেলাম না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান, প্রভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
Leave a Reply